হট ভয়েস

রসায়নের দ্বিতীয় অধ্যায়ের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

রসায়নের দ্বিতীয় অধ্যায়ের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
রসায়ন
দ্বিতীয় অধ্যায়
প্রশ্ন নোট
প্রশ্ন- ১: পদার্থ কাকে বলে?
যার ভর আছে, জায়গা দখল করে ও জড়তা আছে তাকে পদার্থ বলে। পদার্থ সাধারণভাবে কঠিন, তরল ও বায়বীয় এই তিন অবস্থায় থাকে।  
প্রশ্ন- ২: কঠিন, তরল ও বায়বীয় পদার্থের মধ্যে তুলনা কর।
তুলনার বিষয়
কঠিন পদার্থ
তরল পদার্থ
গ্যাসীয় পদার্থ
(১) আকার ও আকৃতি
নির্দিষ্ট আকার ও আকৃতি আছে।
নির্দিষ্ট আকার ও আকৃতি নেই। যে পাত্রে রাখা হয় সে পাত্রের আকার ও আকৃতি ধারণ করে।
নির্দিষ্ট আকার ও আয়তন নেই। যে পাত্রে রাখা হয় সেই পাত্রকে পূর্ণভাবে ধারণ করে।
(২) আয়তন
নির্দিষ্ট আয়তন আছে।
নির্দিষ্ট আয়তন আছে।
আয়তন নির্দিষ্ট নয়। যে পাত্রে রাখা হয় সে পাত্রকে পূর্ণভাবে ধারণ করে।
(৩) সংকোচনশীলতা ও প্রসারণশীলতা
সংকোচনশীলতা ও প্রসারণশীলতা সবচেয়ে কম।
সংকোচনশীলতা ও প্রসারণশীলতা কঠিন পদার্থের তুলনায় বেশি।
সংকোচনশীলতা ও প্রসারণশীলতা সর্বাধিক।
(৪) ঘনত্ব
খুব বেশি
কঠিন থেকে কম
অত্যন্ত কম
(৫) আন্তঃআণবিক আকর্ষণ
আন্তঃআণবিক আকর্ষণ সর্বাধিক এবং কণার স্থানান্তর গতি সর্বনিম্ন
কণার স্থানান্তর গতি ও আন্তঃআণবিক আকর্ষণ সমান।
আন্তঃআণবিক আকর্ষণ সর্বনিম্ন কিন্তু কণার স্থানান্তর গতি সর্বাধিক।
প্রশ্ন- ৩: কণার গতিতত্ব ব্যাখ্যা কর।
যে তত্ব থেকে কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় পদার্থের কণাসমূহ কীভাবে গতিশীল থাকে তা জানা যায় তাকে কণার গতিতত্ব বলে।
কঠিন অবস্থায় পদার্থের আন্ত:আণবিক আকর্ষণ দূরত্ব কম থাকার কারণে বেশি থাকে। তরল পদার্থে আন্তঃআণবিক দুরত্ব তুলনামূলক বেশি থাকে বলে আন্তঃআণবিক আকর্ষণ তুলনামূক কম। আর গ্যাসীয় পদার্থে কণাগুলোর দুরত্ব অনেক বেড়ে যায় বলে কণাসমূহ ইচ্ছেমত ঘুরে-বেড়াতে পারে এবং আন্তঃআণবিক শ্কিত অতিক্রম করে বাইরে বেরিয়ে পড়ে।
প্রশ্ন- ৪: গলনাঙ্ক কাকে বলে?
যে তাপমাত্রায় কঠিন পদার্থ তরলে পরিণত হয় তাকে গলনাঙ্ক বলে।  কঠিন পদার্থের তরলে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে গলন বলে। গলনাঙ্কে কঠিন ও তরল অবস্থা পরস্পর সাম্যাবস্থায় থাকে। যেমন: বরফের গলনাঙ্ক 0
প্রশ্ন- ৫: স্ফূটনাঙ্ক কাকে বলে?
যে তাপমাত্রায় তরল পদার্থ বাষ্পে পরিণত হয় তাকে স্ফূটনাঙ্ক বলে। তরল পদার্থের বাষ্পে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে স্ফূটন বলে। যেমন: পানির স্ফূটনাঙ্ক 100
প্রশ্ন- ৬: হিমাঙ্ক কাকে বলে?
যে তাপমাত্রায় তরল পদার্থ কঠিনে পরিণত হয় তাকে হিমাঙ্ক বলে। হিমাঙ্কে কঠিন ও তরল অবস্থা পরস্পর সাম্যাবস্থায় থাকে। যেমন: পানির হিমাঙ্ক 0
প্রশ্ন- ৭: ঊর্ধ্বপাতন কাকে বলে?
যে প্রক্রিয়ায় কিছু কঠিন পদার্থ (যেমন- নিশাদল, ন্যাপথালিন, আয়োডিন, কর্পূর,কঠিন CO2 ইত্যাদি) তরলে পরিণত না হয়ে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয় তাকে ঊর্ধ্বপাতন বলে।
প্রশ্ন- ৮: ব্যাপন কাকে বলে?
কোন মাধ্যমে কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় বস্তুর স্বতঃস্ফূর্ত ও সমভাবে  ছড়িয়ে পড়ার ঘটনাকে ব্যাপন বলে। যেমন- সেন্টের ব্যাপন।
প্রশ্ন- ৯: নিঃসরণ কাকে বলে?
কোন পাত্রে গ্যাস  আবদ্ধ রেখে যদি পাত্রের দেয়ালে একটি সূক্ষ্ম ছিদ্র তৈরি করা হয় তবে পাত্রে অবস্থিত গ্যাস তৈরি ছিদ্রপথে নির্গত হবে। “দেয়ালের স্বাভাবিক ছিদ্রপথের পরিবর্তে কৃত্তিমভাবে তৈরি পথে গ্যাস নির্গমনের ঘটনাকে নিঃসরণ বা স্কন্দন বলা হয়।”
প্রশ্ন- ১০: ব্যাপন ও নিঃসরণের পার্থক্য লিখ।

ব্যাপন
নিঃসরণ
যে প্রক্রিয়ায় কোন মাধ্যমে তরল, কঠিন বা গ্যাসীয় বস্তুর স্বতঃস্ফূর্ত বা সমভাবে ছড়িয়ে পড়ার ঘটনাকে ব্যাপন বলে।
পাত্রে আবদ্ধ গ্যাসের কোন কৃত্রিম ছিদ্র দিয়ে বেড়িয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে নিঃসরণ বলে।
ব্যাপন স্বাভাবিক অবস্থায় এবং বাহ্যিক চাপের প্রভাব ব্যতীত ঘটে।
বাহ্যিক চাপের প্রভাবে নিঃসরণ ঘটে।
ব্যাপন প্রাকৃতিকভাবে পাত্রের দেয়ালের চারিদিকে অতি সূক্ষ্ম ছিদ্র পথে ঘটে।
কৃত্রিম ভাবে তৈরি সরু ছিদ্রপথে ঘটে।
প্রশ্ন- ১১: মোমের জ্বলনের সময় পদার্থের অবস্থার কি পরিবর্তন হয়?
মোমের জ্বলনের সময় পদার্থের তিনটি অবস্থাই লক্ষ্য করা যায়।
মোম সাধারণভাবে কঠিন পদার্থ হলেও এর জ্বলনের সময় মোম গলতে শুরু করে এবং মোমের সুতাটি তা শোষণ করে নেয়। সুতার অগ্রভাগে মোম গ্যাসীয় অবস্থা প্রাপ্ত হয়, যাকে মোমের বাষ্প বলা হয়। মোমের বাষ্প বায়ুর উপস্থিতিতে দহন হতে থাকে। এভাবে মোম জ্বলার সময় পদার্থের তিনটি অবস্থা পরিলক্ষিত হয়। সুতা যতক্ষণ থাকে ততক্ষণ মোম জ্বলতে থাকে। মোম একটি হাইড্রোকার্বন বা জৈবযৌগ হওয়ায় পর্যাপ্ত বাতাসের উপস্থিতিতে মোমের দহনের ফলে কার্বন ডাইঅক্সাইড ও জলীয়বাষ্প উৎপন্ন হয়। এক্ষেত্রে যে রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে তা হলো-
মোম+O­­2 (g)                               CO2 (g) +H2O (g) +তাপ+আলো
প্রশ্ন- ১২: পদার্থের অবস্থা কিভাবে পরিবর্তিত হয়?
স্বাভাবিক তাপমাত্রায় বিভিন্ন পদার্থ ভিন্ন ভিন্ন অবস্থায় থাকে। যেমন- স্বাভাবিক তাপমাত্রায় পানি তরল। তাপ প্রদান করলে পদার্থের আন্তঃআণবিক আকর্ষণ হ্রাস পায়। ফলে কণাগুলোর স্থানান্তর গতি বেড়ে যায়। তাই পদার্থ কঠিন অবস্থা থেকে তরলে পরিণত হয়। আবার তরল অবস্থায় তাপ প্রদান করলে আন্তঃআণবিক আকর্ষণ অধিকতর হ্রাস পায়। কণার স্থানান্তর গতি অনেক বেড়ে যায়। তাই পদার্থ গ্যাসীয় অবস্থায় পরিণত হয়।
একইভাবে গ্যাসীয় অবস্থায় তাপ হ্রাস করলে গ্যাসীয় পদার্থের আয়তন কমে যায় বলে আন্তঃআণবিক আকর্ষণ সৃষ্টি হয়। ফলে কণাগুলোর স্থানান্তর গতি কমে যায়। তাই পদার্থ গ্যাসীয় অবস্থা থেকে তরল অবস্থায় পরিণত হয়। আবার তরল অবস্থায় তাপ হ্রাস করলে আন্তঃআণবিক আকর্ষণ অধিকতর বৃদ্ধি পায়। কণার স্থানান্তর গতি অনেক কমে যায়। তাই পদার্থ কঠিন অবস্থায় পরিণত হয়।
তবে উদ্বায়ী পদার্থকে তাপ প্রদান করলে তা কঠিন থেকে তরল না হয়ে সরাসরি গ্যাসে পরিণত হয়। আবার গ্যাসীয় অবস্থায় তাপ হ্রাস করলে সরাসরি কঠিন পদার্থে পরিণত হয়। যেমন- কর্পূর, ন্যাপথালিন, নিশাদল ইত্যাদি।
প্রশ্ন- ১৩: উদ্বায়ী পদার্থ কাকে বলে?
যে সকল কঠিন পদার্থকে তাপ দিলে তা তরলে পরিণত না হয়ে সরাসরি গ্যাসে পরিণত হয় তাকে উদ্বায়ী পদার্থ বলে।
Design by MS Design

Powered by Blogger